সময়ের সাথে সাথে মানুষের কর্ম ব্যস্ততা বেড়েছে,বেড়েছে প্রযুক্তি ব্যবহারের সংখ্যা,সেই সাথে প্রযুক্তি আমাদের সবকিছু হাতের নাগালে নিয়ে এসেছে তাই মানুষ প্রযুক্তির এই কল্যাণকে গ্রহন করছে।
তাইতো এখন আমরা ঘরে বসেই ঘরের বাজার থেকে শুরু করে ,পছন্দের খাবার সবই অর্ডার করতে পারছি।
এখন অনেক রেস্টুরেন্ট আছে,যে রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া যায় না,
রান্নার জন্য প্রধান রাধুনি ও সহযোগী ছাড়া প্রয়োজন হয় না একাধিক স্টাফের
এখন অ্যাপ্স বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার করে ঘরে বসেই উপভোগ করা যায় বাহারি ধরনের খাবার।
এই রেস্টুরেন্ট বিজনেস মডেল কে ক্লাউড কিচেন বিজনেস মডেল বলে।
একটা নতুন রেস্টুরেন্ট শুরু করতে চাইলে আপনাকে অনেক বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে হবে এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে:
লোকেশন – এমন লোকেশন সিলেক্ট করতে হবে,যেখানে স্টুডেন্ট থেকে শুরু করে বিজনেসম্যান,ম্যারিড কাপল সব ধরনের মানুষের আনাগোনা থাকবে।
দক্ষ জনবল- একটা রেস্টুরেন্ট বিজনেস করতে হলে প্রত্যেক পদে আপনাকে লোক রাখতে হবে।
ইনভেস্ট- প্রাথমিক ইনভেষ্ট থেকে শুরু করে কমপক্ষে ৬মাসের মোট ব্যয় হাতে রেখে শুরু করতে হবে।
ডেকোরেশন- সময়ের সাথে সাথে মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হয়েছে। ভালো ভালো রেস্টুরেন্টে মানুষ খাওয়া দাওয়া ছাড়া ও পরিবারের সাথে আনন্দ মুহুর্ত গুলো ক্যামেরা বন্দি করে রাখতে চায় এবং তার জন্য প্রয়োজন সুন্দর ডেকোরেশন।
কিন্তু আপনি ক্লাউড কিচেন বিজনেস মডেল ফলো করে বিজনেস শুরু করলে,অনেক কম খরচে শুরু করতে পারবেন
ক্লাউড কিচেন এর সুবিধাঃ
লোকেশন – আপনার বাসার কিচেন অথবা শুধুমাত্র একটা কিচেন স্পেস ।
টার্গেট কাষ্টমার – আপনার কিচেন এর অবস্থান থেকে প্রায় ৫-৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ আপনার টার্গেট কাষ্টমার বা আপনার সেবা গ্রহন করতে পারবে।
জনবল – ডিপেন্ড করে আপনার বিজনেস এর উপর,একবারে নতুন হলে
ছোট পরিসরে ২-৩ জন মিলে কাজ করা সম্ভব।
ইনভেষ্ট- তুলনামূলক খুবই কম খরচের মধ্যে শুরু করা যায় কারন স্টাফের খরচ নাই,ফার্নিচারের খরচ নাই,ইন্টেরিয়রের খরচ নাই।
ইনভেস্ট শুধুমাত্র-রান্নার সহযোগী, রান্নার সরঞ্জাম সমূহ, মার্কেটিং এবং আনুষঙ্গিক খরচ।
ক্লাউড কিচেন শুরু করার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিতঃ
খাবারের মেনু সিলেক্ট করা – পয়েন্ট তা একটু অন্য রকম মনে হলে ও সত্যি যে, এইটার উপর ডিপেন্ড করে আপনার বিজনেস প্ল্যান করতে হবে,তাই আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সেই খাবার গুলো মেনু তে রাখুন।
সঠিক অবস্থান – আপনার টার্গেট কাষ্টমার যদি ,কর্পোরেট বা জব হোল্ডার হয় তাহলে আপনাকে তাদের কাছাকাছি অবস্থান সিলেক্ট করতে হবে। এইটা আপনার খাবারের মেনু বা আপনার টার্গেট কাষ্টমারের উপর অনেকটা নির্ভর করে।
ডকুমেন্ট- যেহেতু “ক্লাউড কিচেন” এক প্রকার রেস্টুরেন্ট ব্যবসা সেহেতু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের প্রয়োজন হতে পারে-
যেমন: ট্রেড লাইসেন্স, স্যানিটারি লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই সনদ, ফায়ার লাইসেন্স, কৃষি উপকরণ সনদ ইত্যাদি।
ডেলিভারি প্রসেস– যেহেতু এই বিজেনেসের মডেল হচ্ছে, খাবার মানুষ অনলাইনে অর্ডার করবে,এবং একজন ডেলিভারি ম্যান আপনার কিচেন থেকে অর্ডারকৃত খাবার পিক করে কাষ্টমারের কাছে পৌছায় দিবে।
এই সম্পূর্ণ প্রসেস একটা অ্যাপ্স বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পরিচালনা করতে হবে
তাই প্রথম পর্যায়ে থার্ড পার্টি অ্যাপ্স ম্যানেজম্যান্ট/ ফুড ডেলিভারি অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন – যেমন: ফুড পান্ডা বা সহজ ফুড।
সময়ের সাথে সাথে বিজনেস বড় হলে, আপনি নিজে এই ম্যানেজম্যান্ট প্রসেস ক্রিয়েট করে নিতে পারবেন।
দক্ষ জনবল – আপনি যদি প্রধান রাধুনি হোন তাহলে একজন সহযোগী রাখতে পারেন, অথবা একজন প্রফেশনাল শেফ হায়ার করতে পারেন, এর ফলে আপনার বিজনেস পরিচালনা করতে সহজ হবে এবং খাবারের মান ভালো থাকবে।
মার্কেটিং – সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে মার্কেটিং। যারা ইত্যিমধ্যে ক্লাউড কিচেন বিজনেস শুরু করেছে এবং নিজের বিজনেস অন্য ফুড ডেলিভারি অ্যাপের উপর ভরসা করে বিজনেস পরিচালনা করছে,
অথচ তারা যদি মার্কেটিং এ বেশি গুরুত্ব দিলে হয়তো এই অ্যাপের উপর নির্ভর করে থাকতে হতো না,কমিশন দেয়ার প্রয়োজন হতো না, বরং নিজের বিজনেস কে আলাদা ভাবে ব্র্যান্ড হিসাবে ক্রিয়েট করা যেতো।
আশা করি বুঝাতে পেরেছি,আজকের লেখা ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন বা কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
বিস্তারিত জানতে ভিডিও টি দেখতে পারেন। 👇